ঐতিহ্যগতভাবে বাংলাদেশের জনগণ অবহেলিত দুঃস্থ এতিম শিশুদের প্রতিপালনের দায়িত্ব গ্রহণে বদ্ধপরিকর। বাংলাদেশের সকল ধর্মীয় জনগনেরই এতিম শিশুদের লালনপালনের জন্য বেসরকারিভাবে এতিমখানা পরিচালনা করে আসছে। বেসরকারি এসকল এতিমখানা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য সমাজসেবা অধিদফতর হতে সহযোগিতা প্রদান করা হয়। বেসরকারিভাবে এতিমখানাসমূহ প্রথমতঃ স্বেচ্ছাসেবী সমাজকল্যাণ সংস্থাসমূহ (নিবন্ধন ও নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাদেশ ১৯৬১ অনুযায়ী নিবন্ধন প্রদান এবং পরবর্তীতে নিবন্ধন প্রাপ্ত বেসরকারি এতিমখানাসমূহের শিশুদের প্রতিপালন, চিকিৎসা এবং শিক্ষা প্রদানের জন্য আর্থিক সহায়তা করা হয় যা ক্যাপিটেশন গ্রান্ট নামে পরিচিত। বর্তমানে ৪ হাজার ১২ টি বেসরকারী এতিমখানার ১ লক্ষ ৬ হাজার এতিম শিশুকে ক্যাপিটেশন গ্রান্ট প্রদান করা হচ্ছে। দরিদ্র এতিম শিশুদের মানবসম্পদে পরিনত করাই ক্যাপিটেশন গ্রান্টের প্রধান উদ্দেশ্য।
বর্তমান সরকারের আমলে “বেসরকারি এতিমখানায় ক্যাপিটেশন গ্র্যান্ট বরাদ্দ ও বণ্টন নীতিমালা ২০১৫” প্রণয়ন করা হয়। ক্যাপিটেশন গ্র্যান্ট প্রদানের ক্ষেত্রে সরকারি নীতিমালা যথাযথভাবে অনুসরণ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে ক্যাপিটেশন গ্র্যান্ট প্রদানে আর্থিক শৃঙ্খলা সুসংহত করা হয়েছে। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় এবং অধিদফতর পর্যায়ে নিবিড় তদারকি এবং মনিটরিং জোরদার করা হয়েছে। আশা করা যায়, এ ধারা অব্যাহত থাকলে দেশের এতিম শিশুদের প্রতিপালনে বেসরকারি পর্যায়ে উৎসাহব্যাঞ্জক সাড়া সৃষ্টি করা সম্ভব হবে। ক্যাপিটেশন গ্র্যান্টপ্রাপ্ত বেসরকারি এতিমখানার উন্মুক্ত স্থানে নাম ফলক লাগানো হয়েছে। প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানে ধর্মীয় শিক্ষার পাশাপাশি প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও সমমান শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানের নিবাসিদের দ্বারা জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। বেসরকারি এতিমখানায় ক্যাপিটেশন গ্র্যান্ট বরাদ্দ সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা বলয় কর্মসূচির একটি উল্লেখযোগ্য অংশ।
কার্যক্রম বাস্তবায়ন সংশ্লিষ্টগণ
সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় নিয়ন্ত্রণাধীন সমাজসেবা অধিদফতরের কার্যক্রম শাখা বেসরকারি এতিমখানা নিবন্ধন এবং প্রতিষ্ঠান শাখা ক্যাপিটেশন গ্রান্ট পরিচালনা করে। পরিচালক (প্রতিষ্ঠান) এর নেতৃত্বে অতিরিক্ত পরিচালক, উপপরিচালক, সহকারী পরিচালক, সমাজসেবা অফিসার সদর দপ্তর পর্যায়ে ক্যাপিটেশন গ্রান্ট কার্যক্রম পরিচালনার সাথে সংশ্লিষ্ট। জেলা পর্যায়ের উপপরিচালক, সহকারী পরিচালক, রেজিস্ট্রেশন অফিসার, উপজেলা সমাজসেবা অফিসার এবং শহর সমাজসেবা অফিসার মাঠ পর্যায়ের বেসরকারি এতিমখানার ক্যাপিটেশন গ্রান্ট কার্যক্রম তদারকি এবং মাঠ পর্যায় ও সদর দপ্তরের মধ্যে সমন্বয় সাধন করে থাকেন।
সেবা
অর্থবছরভিত্তিক ক্যাপিটেশন গ্রান্ট এর হিসাব
দেশের অসহায় এতিম শিশুদের কল্যাণে সরকারি উদ্যোগে বেসরকারি এতিমখানা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য আনুমানিক ৬০ (ষাট) দশকের গোড়ার দিকে নিবাসি প্রতি মাথাপিছু মাসিক ৩৬০/- টাকা হারে অনুদান (ক্যাপিটেশন গ্র্যান্ট) প্রদান করে আসছে। সমাজসেবা অধিদফতর র্কতৃক নিবন্ধকৃত বেসরকারি এতিমখানার নীতিমালার ৭.১২ এর আলোকে নূন্যতম ১০ (দশ) জন এতিম অবস্থান করে এই রকম প্রতিষ্ঠানকে র্সবোচ্চ ৫০% এতিমের জন্য ক্যাপিটেশন গ্র্যান্ট দেওয়ার সুযোগ বিদ্যমান রয়েছে। ২০১৯-২০২০ র্অথ বছর হতে নিবাসিদের মাথাপিছু মাসিক ২,০০০/- টাকা করে সরকারি অনুদান দেওয়া হয়, যার বিভাজন: খাদ্য বাবদ ১৬০০/-, পোষাক বাবদ ২০০/- এবং চিকিসা ও অন্যান্য বাবদ ২০০/- টাকা। বিগত ১৯৯১-১৯৯২ হতে অদ্যাবধি ক্যাপিটেশন গ্র্যান্ট বরাদ্দ সংক্রান্ত তথ্য নিম্নে দেওয়া হলোঃ
অর্থ বৎসর |
ক্যাপিটেশন গ্র্যান্টপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা |
নিবাসী সংখ্যা |
অর্থের পরিমাণ |
মাথাপিছু মাসিক বরাদ্দ |
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস